শেষ ওভার নিজের মতোই বল করেছেন নাসির

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ১৬, ২০১৫ ০৬:১২

শেষ ওভার নিজের মতোই বল করেছেন নাসির

 

তৈয়বুর রহমান টনিঃ

প্রায় মুঠো থেকে বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচটা জিতিয়েছেন অবিশ্বাস্যভাবে। জিম্বাবুয়ের মাদজিভা তাই আবেগটা সংবরণ করতে পারলেন না, উদ্‌যাপনটা হলদ্তেতো স্বাদ নিয়ে বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচটি শেষ করল টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ৩ উইকেটে পরাজিত হয়েছে মাশরাফি বাহিনী। শেষ ওভারে নেভিল মাদজিভার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে তিন উইকেটের নাটকীয় জয় পেয়েছে চিগুম্বুরার দল।T20 Bangla_1zima2015

শেষ ওভারে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। এমন সময় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বল তুলে দেন নাসির হোসেনের হাতে। দলের সেরা বোলারদের দিয়ে আগেই বল করিয়ে ফেলায় শেষ ওভারে বাধ্য হয়েছিলেন তাকে দিয়ে বল করাতে। তবে নাসিরকে নির্দিষ্ট কোনো কিছু বলে দেননি তিনি। পুরোটাই ছেড়ে দিয়েছিলেন তার হাতে। নেভিল মাদজিভা মোস্তাফিজুর বলে আউট হয়ে ফিরে গিয়েছিল কিন্তু এ্যামপায়ের টিভি রিপ্লে দেখে নো-বল হওয়াতে ব্যাটস ম্যান নেভিল মাদজিভার খেলার সুযোগ পেয়ে শেষ ওভারে আগুনের ফুলকির মত খেলতে থাকে।

নতুন জীবন পেয়ে নতুন উদ্যমে ফেরেন মাডজিভা। শেষ ওভারে ৪ বলে ১৮ রান নিয়ে দুর্দান্ত এক জয় এনে দেন জিম্বাবুয়েকে। অধিনায়ক মাশরাফী প্রথম বল দিয়ে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।

কিন্তু নাছির জিম্বাবুয়ের নেভিল মাদজিভারকে গোনায় ধরেনি। তার বল করা দেখে মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ জিতেই গিয়েছে, গাঁ’ছাড়া ভাবে সে বল করছিল। আর তাকে কেউ বলার ছিলনা বা তার কাছে মনে হচ্ছিল কখন খেলা শেষ হবে। তাহলে নাছির উইকেট হাতে নিয়ে বিজয় উল্লাস করবে। একজন আনকোরা খেলোয়ারের মতো সে বোলিং করছিলো। যেটাকে দেশ ও প্রবাসের ক্রিকেট ভক্তদের আপেক্ষ বেড়ে দিয়েছে। যেটা কেউ আশা করেনি।

Bangladesh’s Nasir Hossain is bowled out by Zimbabwe’s Tinashe Panyangara during their second Twenty20 international cricket match in Dhaka, Bangladesh, Sunday, Nov. 15, 2015. (AP Photo/A.M. Ahad)

Bangladesh’s Nasir Hossain is bowled out by Zimbabwe’s Tinashe Panyangara during their second Twenty20 international cricket match in Dhaka, Bangladesh, Sunday, Nov. 15, 2015. (AP Photo/A.M. Ahad)

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে নাসির প্রসঙ্গে মাশরাফি বলেন, “নাসিরকে আমি আসলে কিছুই বলি নাই। ওই সময় আর কোনো অপশন ছিল না। হয়তো বা রিয়াদ ছিল। ওকে বলেছিলাম রিলাক্স থেকেই বল করতে। স্বাভাবিকভাবে যেভাবে বল করে সেভাবেই করতে। এইসব জায়গায় ও আগে বল করেনি। এটা ওর জন্য নতুন। ও যা পারে তাই করতে বলেছিলাম।”

শেষ দিকে বল করতে এসে অনেকটা জোড়ের উপর বল করছিলেন নাসির। তাকে এভাবে বল করতে বলা হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নে মাশরাফি আরও বলেন, “হ্যাঁ, নাসির জোরে বল করছিল। এটা পুরোটাই ওর উপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। এইসব জায়গায় বোলিং করতে ও নিয়মিত না। ওর যেভাবে মন চায় সেভাবেই করতে বলেছিলাম। ও ভালো বোলার আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি।”

তবে ব্যাটিং করে মাত্র ১৩৫ রানকে এই উইকেটে কম বলে উল্লখে করেছেন মাশরাফি। ব্যাটিং ব্যর্থতা মেনে নিয়ে মাশরাফি আরও বলেন, “উইকেটটা ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ ছিল না; তার মানে এই না যে ১৩৫। ১৫০ ভালো স্কোর। আমরা দল হিসেবে খুবই বাজে খেলেছি।”রবিবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান করে বাংলাদেশ। চার বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা ইমরুল কায়েসের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ভালো সূচনা এনে দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তাদের ৩.৪ ওভার স্থায়ী ৩৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে তামিমের বিদায়ে। নেভিল মাডজিভার বল উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে এল্টন চিগুম্বুরার ক্যাচে পরিণত হন তামিম। ১৫ বলে খেলা তার ২১ রানের ইনিংসটি গড়া দুটি ছক্কা ও একটি চারে।

ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে শুরু—সারাটা বছর বাংলাদেশ হেসেছে জয়ের আনন্দে। শেষটা রঙিন না হওয়ার খানিকটা আফসোস থেকে গেল। পুরো বছরকে বড় করে দেখাতে চাইলেও শেষটা ভালো না হওয়ার আক্ষেপ ঝরল মাশরাফির কণ্ঠেও, ‘বছরটা অনেক বড় ছিল। চেষ্টা করেছি ভালোভাবে শেষ করার, দুর্ভাগ্যবশত হয়নি। সব মিলিয়ে গর্ববোধ করি, ২০১৫ সালের সাফল্য নিয়ে। আশা করি, ২০১৬ আরও ভালো ক্রিকেট খেলব।’
একটি পরাজয়ে পুরো সাফল্য মিথ্যে হয়ে যায় না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এ পরাজয়েও বাংলাদেশের রঙিন বছরটা বিবর্ণ হবে না। পরাজয় ভুলে মাশরাফিরা নিশ্চয়ই সামনে জয়ের রেখাটা আরও দূরে টেনে নিতে চাইবেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (তামিম ২১, ইমরুল ১০, এনামুল ৪৭, মুশফিক ৯, সাব্বির ১৭, নাসির ৩, মাহমুদউল্লাহ ৮, মাশরাফি ০, আরাফাত ৫, মুস্তাফিজ ১*, আল আমিন ১

পানিয়াঙ্গারা ৪-০-৩০-৩, মাডজিভা ৪-০-২৫-২, চিশোরো ৪-০-২৭-১, উইলিয়ামস ৪-০-২৬-০, ক্রেমার ৪-০-২১-২)

জিম্বাবুয়ে: ১৯.৫ ওভারে ১৩৬/৭ (রাজা ৫, চাকাভা ৪, উইলিয়ামস ০, আরভিন ১৫, জংউই, চিগুম্বুরা ০, ওয়ালার ৩৪, মাডজিভা ২৮*,  ক্রেমার ০*;

মাশরাফি ৪-০-২৭-০, আল আমিন ৪-০-২০-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-১২-১, আরাফাত ৪-০-২৬-১, নাসির ৩.৫-০-৪৫-১)

ফল: জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা: নেভিল মাডজিভা সিরিজ সেরা: ম্যালকম ওয়ালার

 

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ১৬, ২০১৫ ০৬:১২

  • Sorry. No data yet.
Ajax spinner