শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষে জয় বাংলা স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেনেড হামলা

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ২৭, ২০১৭ ০৯:৫৮

শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষে জয় বাংলা স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেনেড হামলা

ঢাকা : ২০০৪ সালের ২১ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা শেষে জয় বাংলা স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সিনিয়র এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আজ ১৪ তম দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ মামলার বিচার চলছে। মামলার কার্যক্রম কাল মঙ্গলবার পর্যন্ত মূলতবি করা হয়েছে।

প্রধান কোঁসুলিকে যুক্তিতর্ক পেশে আরো সহায়তা করছেন আইনজীবী আকরাম উদ্দিন শ্যামল, ফারহানা রেজা। এছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে মো. আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত ও আশরাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আব্দুল সোবহান তরফদারসহ অন্যান্যরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গত ২৩ অক্টোবর থেকে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু হয়েছে।

আজ যুক্তিতর্কে মামলার এজহারকারী ও রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষি মতিঝিল থানার তৎকালীন সাব-ইন্সপেক্টও শরীফ ফারুক আহমেদসহ রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম ৩৭ জন সাক্ষির জবানবন্দির অংশ বিশেষ তুলে ধরা হয়। সাক্ষিদের মধ্যে রয়েছেন-ঘটনায় নিহতের মরদেহের সুরতহালকারী, জব্দ তালিকা ও ঘটনাকালীন উপস্থিত সাক্ষি।

এজহারকারী তার জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনা ওই দিন বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের সময় তার বক্তৃতা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। সভার জন্য ট্রাকে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চের ২ ফুটের মধ্যেই গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। ৭/৮টির মতো গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়। ঘটনায় শতাধীক লোক হতাহত হয়। যাতে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, আইনজীবী-সাংবাদিকও রয়েছেন। এ মামলার প্রথম আইও-এসআই মো. আমির হোসেনের তথ্যের সঙ্গে এজাহারকারীর তথ্যের মিল পাওয়া যায় বলে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্কে বলেন।

আজ রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থাপিত ঘটনার অন্য সাক্ষিরাও তাদের জবানবন্দিতে বলেন, শেখ হাসিনার বক্তৃতার পর জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেনেড হামলা শুরু হয়।

এডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান আজ যুক্তিতর্কের শুরুতেই আদালতে বলেন, মামলার যে সকল আসামীরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পেশ করেছেন এবং সাক্ষিদের মধ্যে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন তা যুক্তিতর্কে এ পর্যন্ত তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি সমথর্নে সাক্ষি ও আসামীরা কে কি বলেছেন তা তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া এজাহারের কিছু অংশ এবং অভিযোগপত্রের কিছু অংশ যুক্তিতর্কে তুলে ধরা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ যুক্তিতর্ক পেশ করা হবে।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৫১১ জনকে সাক্ষি করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির জ্যেষ্ঠ বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দসহ ২২৫ জনের সাক্ষ্য দিয়েছেন। আসামীপক্ষেও ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এসব সাক্ষ্য জেরা করেছে।

২১ আগষ্টের ওই নৃশংস হামলায় পৃথক দুটি মামলায় মোট আসামী ৫২ জন। মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছে। এ মামলায় পুলিশের সাবেক আইজি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদাবক্স চৌধুরী, লে.কমান্ডার (অব:) সাইফুল ইসলাম ডিউক এবং মামলার সাবেক তিন তদন্ত কর্মকর্তা- সিআইডি’র সাবেক এসপি রুহুল আমিন, সিআইডি’র সাবেক এএসপি আতিকুর রহমান ও আবদুর রশিদসহ মোট ৮ জন জামিনে রয়েছে। তারেক রহমান, বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মেজর জেনারেল (এলপিআর) এটিএম আমিন, লে.কর্নেল (অব:) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দারসহ ১৮ জন এখনো পলাতক। এছাড়া ৩ জন আসামী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, মুফতি হান্নান ও শরীফ সাইদুল আলম বিপুলের অন্য মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হওয়ায় এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পলাতক আসামীদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী রয়েছেন।

বিএনপি-জামায়াতের জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের এক সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। ওই নৃশংস হামলায় ২৪ জন নিহত ও নেতকর্মী-আইনজীবী-সাংবাদিকসহ পাঁচ শতাধিক লোক আহত হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন তৎকালীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের পতœী আইভি রহমান। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অন্যান্য নেতা এই গ্রেনেড হামলা থেকে বেঁচে যান। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচন্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তিতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ২৭, ২০১৭ ০৯:৫৮
01212016_11_ALBD_CONSTITUTION

  • Sorry. No data yet.
Ajax spinner