বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করেনি : আইনমন্ত্রী
Related Articles
ঢাকা : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের জন্য যে শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়ন করা হয়েছে তা দ্বারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোনভাবেই ক্ষুণ্ন হয়নি। তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বর্ণিত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতাও এই শৃঙ্খলা বিধিতে ন্যস্ত রয়েছে।’ আজ বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সরকারি কৌশুলী (জিপি) এবং পাবলিক প্রসিকিউটরদের (পিপি) বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরে এবং সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের আলোকে বিচারকদের জন্য একটি শৃঙ্খলা বিধি তৈরি হওয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল। ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর যখন বিচার বিভাগ স্বাধীন হয় তখন এই শৃঙ্খলা বিধির প্রয়োজনীয়তা আরো বৃদ্ধি পায়। এর প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেলেও ২০১৪ সালের আগে এই শৃঙ্খলা বিধি তৈরি হয়নি। এটি তৈরি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এর খসড়া তৈরির পর প্রায় এক বছর এটি সুপ্রিম কোর্টের বিবেচনায় ছিল।’ তিনি বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির যে ক্ষমতা ছিল সেটা এই শৃঙ্খলা বিধির মাধ্যমে নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল এবং এই চেষ্টা ছিল সংবিধান বিরোধী।
মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে রাষ্ট্রপতিকে দেখিয়ে শৃঙ্খলা বিধির গেজেট করা হয়েছে এবং সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের আলোকে এই শৃঙ্খলা বিধি করা হয়েছে। শৃঙ্খলা বিধির ২৯(২) উপধারায় পরিষ্কারভাবে বলা আছে যদি রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিমকোর্টের মধ্যে কোন বিষয়ে দ্বিমত দেখা দেয় এবং সেটা যদি নিরসন না হয় তাহলে সুপ্রিম কোর্টের শেষ পরামর্শ যেটা সেটাই প্রধান্য পাবে। তাই এই শৃঙ্খলা বিধি দ্বারা বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোন মতেই ক্ষুণœ হয়নি।’
আনিসুল হক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের মতো বিচার বিভাগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আজ পর্যন্ত দেশে কোন সরকার গঠন হয় নাই এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আওয়ামী লীগ সরকারই সমুন্নত রেখেছে। অন্য সব সরকারই আইনের মৌলিক নিয়ম-নীতিগুলো লঙ্ঘন করে দেশ চালিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য থেকে মুক্তি দিতে সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নাই নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব রাষ্ট্রের সকল অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের হলেও, বিচার বিভাগ এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে।
জিপি এবং পিপিদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু সরকারি মামলায় সরকারকে যথাযথভাবে প্রতিনিধিত্ব করা নয়, সরকারি আইনজীবী হিসেবে আপনাদের স্ব স্ব অফিসের সঠিক ব্যবস্থাপনা, সঠিকভাবে মামলার ফাইল পরিচালনা করা, সরকারসহ সরকারি স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে মামলা পরিচালনা করে সেবার মানসিকতা নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হকও বক্তৃতা করেন।