নোয়াখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Awamileague Times
By Awamileague Times জানুয়ারি ৪, ২০১৮ ১০:০১

নোয়াখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার দেশের সার্বিক উন্নয়নে অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এই লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।আজ সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা নিরসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে নোয়াখালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প উদ্বোধনকালে তিনি এই কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখনই ক্ষমতায় এসেছি তখনই আমাদের লক্ষ্য ছিল দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং এই লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে।মেঘনা ও হাতিয়া নদীর ভাঙ্গন রোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীনে প্রকল্পটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩শ’ ২৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। আগামী ২০২১ সাল নাগাদ এর কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে ১৬ হাজার মেট্রিক টন খাদ্য শস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এবং ২২৩ মেট্রিক টন মৎস উৎপাদন বাড়বে।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনেয়ার হোসেন মঞ্জু এবং সেনবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মুহম্মদ শফিউল হক শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন।পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হুমায়ুন কবির একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রকল্পটি উপস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর দেশ পুণর্গঠনের উদ্যোগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা প্রতিটি মানুষ যেন বসবাসের জন্য একটু আশ্রয় পায় সেজন্য এই নোয়াখালী থেকেই ‘গুচ্ছ গ্রাম’ প্রকল্প শুরু করেন। অথচ মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তাঁকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলে আর দেশের উন্নয়নের কাজ এগোয়নি। বিভিন্ন ভাবে প্রায় ২৯টি বছর বাঙালির জীবন থেকে হারিয়ে যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ’৯৬ সালে সরকার গঠন করলেও আগে থেকেই একটি উপ-কমিটির আওতাধীনে অর্থনৈতিক কমিটি করে দিয়ে ক্ষমতায় গেলে দলের অর্থনৈতিক নীতিমালা কি হয় তা ঠিক করে রেখেছিল। তিনি বলেন, জাতির পিতা কি চাইতেন সেভাবেই আমরা দেশের উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করি। দেশটাকে সার্বিকভাবে উন্নত করবো এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য যখনই সরকারে এসেছি আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। নোয়াখালী অত্যন্ত পুরনো জেলা হলেও সবসময় অবহেলিত ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করতে বাঁচতে হয় বলে এই জেলার মানুষ খুব কষ্ট সহিষ্ণু। সাগরের কাছাকাছি এই জেলার একদিকে মেঘনা নদী অন্যদিকে হাতিয়া নদী। তাই প্রতিনিয়ত দুর্যোগের শিকার হয় এই জেলার মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৮১ সালে প্রবাস জীবনে বাধ্য হবার পর দেশে ফিরে আসার কথা স্মরণ করে বলেন, তখন থেকেই সারাদেশ ঘুরে বেড়ানোর সময় আমি শুনেছি এই নোয়াখালী খালটা কেটে দিলে মানুষের খুব উপকার হয়। এটা আমাদের একটা প্রতিশ্রুতি ছিল আমরা ক্ষমতায় গেলে অবশ্যই এই নোয়াখালী খাল আমরা খনন করবো এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেব।এজন্য ’৯৬ সালে তাঁর সরকার একটি সমীক্ষা চালায় বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। কিন্তু পরবর্তিতে ক্ষমতায় আসা বিএনপি-জামায়াত জোটের কাজই হয়ে যায় হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং এবং পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করা যে কারণে এই কাজ আর এগোয়নি। হয়তো তারা আমাদের সমাপ্ত করা কিছু কাজের কেবল ফিতা কেটেছে। এর বেশি কিছু করতে পারেনি।

২০০৯ সালে আমরা আবার ক্ষমতায় এসে এই কাজটি সম্পন্নের উদ্যোগ গ্রহণ করি। আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম এই কাজটি আমাদের একটা বিরাট কর্মযজ্ঞ এবং স্বাভাবিকভাবেই ঘনবসতির দেশে কোন কাজ করতে গেলে কিছু মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কিছু মানুষ উপকৃত হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা একটি ঘোষণা দিয়েছিলাম আপনারা জানেন- উন্নয়ন কাজে যাদের জমি নেয়া হবে তাদের বর্তমান মূল্য থেকে তিনগুণ অর্থ প্রদান করা হবে। যাতে কোন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেই। সেইদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজটি দ্রুত সম্পন্নের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি।’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নোয়াখালীর সুবর্ণ চরে প্রায় ৪ হাজার মানুষকে পুনর্বাসন করে। এভাবে সারা বাংলাদেশে সে সময় দেড় থেকে দুই লাখ গৃহহীনকে পুনর্বাসন এবং ভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বিতরণের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য আমরা সেনাবাহিনী ৩৪ কনস্ট্রাকশন বিগ্রেডের ওপর দায়িত্ব দিয়েছি। এই ব্যাপারে ঐ এলাকা সকলের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, এই কাজটা সম্পন্ন হলে সেখানে যেমন একদিকে চাষবাস উন্নত হবে, ফসল উৎপাদন বাড়বে আবার মৎস্য উৎপাদনও বাড়বে এবং লবণাক্ততা থেকে জমি রক্ষা পাবে। ফলে দেশের মানুষ বিশেষ করে নোয়াখালীবাসীর আর্থ-সামাজিক উন্নতি হবে।এখানে একটি প্রকল্পের সঙ্গে অনেকগুলো কাজ সম্পৃক্ত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে মেঘনা ক্রস ড্যাম নির্মাণ হবে। এর ফলে এখন থেকে ভূমি উত্তোলিত হয়ে মোট ভূমির আয়তন বাড়বে। যেখাানে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বনায়ন করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় নদী এবং সাগর থেকে ভূমি উত্তোলন করে জমির পরিমাণ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেসব স্থানে ব্যাপক বনায়নের নির্দেশ দেন।প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নেরর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ব্যাপকভাবে বৃক্ষরোপণও করতে হবে। যাতে যেকোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ভূমি মুক্ত রাখা যায়।তিনি বলেন, এখানে প্রকল্পে থাকবে ২৩টি খালের ১৮২ কিলোমিটার পুনর্খনন, নদী ড্রেজিং হবে ৭ কি.মি, চ্যানেলের ও লুপ খাল পুনর্খনন, ১০ কি.মি বাঁধ নির্মাণ, একটি ক্লোজার ও দুটি রেগুলেটর নির্মাণ করা হবে।প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে প্রকল্পটি উদ্বোধনের জন্য নোয়াখালীবাসীকে অভিন্দন এবং ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

Awamileague Times
By Awamileague Times জানুয়ারি ৪, ২০১৮ ১০:০১
01212016_11_ALBD_CONSTITUTION

  • Sorry. No data yet.
Ajax spinner