যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন প্রবাসীরা
Related Articles
তৈয়বুর রহমান টনি নিউ ইর্য়ক থেকেঃ
সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন প্রবাসীরা। এবার যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউইয়র্কে। নামাজ শুরুর আগেই সবার নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে সেখানে বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড উইপ্রিন ও স্থানীয় কাউন্সিলম্যান রোরি ল্যান্সম্যান, মেয়র অফিসের প্রতিনিধি।
নিউইয়র্কের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায় জামাইকা হাই স্কুল প্রাঙ্গণে। নারী, পুরুষ, শিশু সব বয়সী প্রবাসীরা অংশ নেয় ঈদ জমাতে। দেশের মতো সবাই একসাথে ঈদের নামাজ পড়তে পেরে খুশি প্রবাসীরা।এতে অংশগ্রহণ করেন প্রায় ১০/১২ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সব রাজ্যে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস সিয়াম সাধনার পর বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হওয়ায় খবরে কমিউনিটির সবখানে খুশীর বন্যা বয়ে যাচ্ছে। শুরু হয়েছে মোবাইলের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ‘ঈদ মোবারক’ জানানোর আনুষ্ঠানিকতা। কেউ কেউ ভার্চুয়াল দুনিয়াকে বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক টুইটারে জানাচ্ছেন ঈদের শুভেচ্ছা।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পরিবারও সবাইকে জানাচ্ছে ঈদের শুভেচ্ছা ‘ঈদ মোবারাক’।
চমৎকার আবহাওয়ায় নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকার একাধিক খোলা মাঠ, মসজিদ আর কমিউনিটি সেন্টারে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করা হয়। ঈদের জামাত শেষে অনুষ্ঠিত বিশেষ মুনাজাতে সমগ্র মুসলিম উম্মাসহ দেশ-জাতির মঙ্গল ও সমৃদ্ধি এবং দেশে দেশে নিপীড়িত-নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষায় মহান আল্লাহর রহমত ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করা হয়।
এই জামাতে ইমামতি ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন জেএমসি’র খতিব আলহাজ মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। এদিকে কানাডা ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোরিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এসব অঙ্গরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এলাকার মসজিদ, কমিউনিটি সেন্টার ও খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
প্রতিটি ঈদের জামাত শেষে নবীন-প্রবীণ, ছোট-বড় সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও কোলাকুলি করতে দেখা যায়। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে সর্বত্রই নেয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেই সাথে সিটি প্রশাসনেরও বিশেষ নিরাপত্তা লক্ষ্য করা যায়। ঈদের নামাজ আদায়ের স্থানগুলোর আশপাশের রাস্তায় ফ্রি গাড়ী পার্কিং এর ব্যবস্থা থাকায় দূর দূরান্ত থেকে শত শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সপরিবারে ঈদের নামাজে শরীক হন। রং বেরং এর বাহারি পোশাক গায়ে নামাজিদের একত্রে ঈদের নামাজ আদায় ভীন দেশীদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। সেই সাথে ঈদের মাঠে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। ঈদের দিনটি উইক ডে বুধবার থাকার পরও ঈদের নামাজের জায়াতগুলোতে বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ মুসলিম নর-নারীকে যোগ দিতে দেখা যায়। অনেকে ঈদেও নামাজ আদায় করেই কাজে চলে যান। অনেকে স্বপরিবারে বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘনিষ্টজনদের বাসা-বাড়ীতে গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া প্রবাসীরা ফোনে বাংলাদেশে ফোন করে স্বজনদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
নিউইয়র্কের উল্লেখযোগ্য ঈদের জামাতগুলোর মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট ও ব্রডওয়ের কর্ণারে ডাইভারসিটি প্লাজায় নিউইয়র্ক ঈদ গাঁহ’র উদ্যোগে খোলা রাস্তার উপর ঈদুল ফিতরের একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জ্যামাইকার আল আরাফা ইসলামিক সেন্টারের উদ্যোগে স্থানীয় সুসান বি এন্থনি স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নীচে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও ইষ্ট এলমহার্স্ট জামে মসজিদ অ্যান্ড মুসলিম সেন্টারের উদ্যোগে স্থানীয় পিএস ১২৭ স্কুলের প্লে গ্রাউন্ডসহ কুইন্সের জ্যামাইকার বাংলাদেশ মিশন (হাজী ক্যাম্প) মসজিদ, দারুস সালাম মসজিদ, হিলসাইড ইসলামিক সেন্টার, ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার এন্ড মসজিদ, জ্যাকসন হাইটসের জ্যাকসন হাইটস ইসলামিক সেন্টার, মসজিদ আবু হুরায়রা, মোহাম্মদী সেন্টার, ওজনপার্কের আল আমান জামে মসজিদ, দারুস সুন্নাহ মসজিদ, আল ফোরকান মসজিদ, ব্রুকলিনের বাংলাদেশ মসুলিম সেন্টার, বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদ, ম্যানহাটানের মদিনা মসজিদ, আসসাফা মসজিদ, আমেরিকান মুসলিম সেন্টার, এস্টোরিয়ার আল আমীন মসজিদ, গাউছিয়া মসজিদ, ব্রঙ্কসের পার্কচেস্টার জামে মসজিদ, বাংলাবাজার জামে মসজিদ, নর্থ ব্রঙ্কস জামে মসজিদ প্রভৃতি মসজিদের উদ্যোগে খোলা মাঠে বা মসজিদ ভবনে ঈদুল ফিতরের একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়।