শ্রদ্ধা ও ইতিহাসের কলঙ্কময়, বেদনাবিধুর জেল হত্যা দিবস পালন করলো ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগ

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ৬, ২০১৬ ১৯:৫৫

শ্রদ্ধা ও ইতিহাসের কলঙ্কময়, বেদনাবিধুর জেল হত্যা দিবস পালন করলো ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামী লীগ

তৈয়বুর রহমান টনি-
নভেম্বর মাস। এ মাসে একটা বিশেষ ঘটনা বাংলাদেশীদের জন্যে কষ্টের ও কলঙ্কের চিহ্ন হয়ে আছে তা হচ্ছে ৩রা নভেম্বর রক্তঝরা ঐতিহাসিক জেল হত্যা দিবস। বাংলাদেশের রূপকারদের মধ্যে প্রধান ৫ জনকে ১৯৭৫ সালে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয় -তাদের মধ্যে চারজনকে সভ্যতার নিয়মনীতি ও আইনের শাসনের চরম লংঘন করে জেলের ভিতর হত্যা করা হয়। নির্মম হত্যাকান্ডে নিহত চারজন হলেন: সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহম্মেদ, কামরুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী।

কারাগারে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্হায় এই ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড পৃথীবির ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ।৭৫’র ১৫ই আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামীলীগ সরকারকে উৎখাতকারীদের ষড়যণ্ত্রে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর এই চার জাতীয় নেতাকে জেলের অন্ধ প্রকষ্টে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব শুন্য করার যে প্রয়াস ৭১’ পরাজিত শক্তি এবং দেশী বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীরা নিয়েছিল তার ফল আজকের এই বাংলাদেশ। আজকের এইদিনে জাতির এই সেরা সন্তানদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি, সেই সাথে সকল অসুভ শক্তি পরাজিত হোক এই কামনা করছি ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস।2

জাতীয় চার নেতার স্মরণে ফ্লোরিডা স্টেট আওয়ামীলীগের উদ্যোগে গত ৩রা নভেম্বর ২০১৬ রাত ৯টায় স্হানীয় সাফরন এন্ড কারী রেস্টুরেন্টে স্টেট আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জবাব আলহাজ্ব শাহিন মাহমুদের সভাপতিত্বে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মোহাম্মদ আকরাম হোসেনের কোরান তেলাওয়াত ও শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতিবৃন্দ যথাক্রমে সর্বজনাব নান্নু আহমেদ, কুদরত-এ-খুদা, সরকার হারুন, নাফিস জুয়েল, লায়লা হারুন, ফ্লোরিডা ডেমোক্রেটিক পার্টির কোঅরডিনেটর জনাব জুনায়েদ আকতার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আকরাম হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রুবি আওলাদ এবং নতুন প্রজন্মের আরশি আওলাদ।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্হিত ছিলেন সর্বজনাব চেমন আরা মুজিব, আলম আশু, আনোয়ারুল আলম খান দিপু,  চিত্রা সুলতানা, টিপু আলম, নাঈম খান দাদন, যুবলীগ নেতা একরাম হোসেন রতন, রেজাউল করিম প্রমুখ।

সভায় বক্তাগন সদ্যগঠিত বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সহ সকল সদস্যদের অভিনন্দন জানান ।

বক্তারা জাতীয় চার নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাদেরই যোগ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করে বলে উল্লেখ করেন ।

বক্ত্যারা বলেন জেল হত্যা দিবসের গুরুত্ব নিয়ে বিশদ আলোচান করেন এবং আজ এই শোককে শক্তিতে পরিনত করে সকলকে সব ভেদাবেদ ভূলে গিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। আরওবলেন-“জাতীয় চার নেতা হত্যা ইতিহাসের এক কলংকজনক অধ্যায়। জাতিকে মেধা শূন্য করার জন্যই এটি ‘৭১ সালের পরাজিত শক্তির সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার খুনের নেপথ্যে অপশক্তির চিন্তা ছিল জাতীয় চার নেতা জীবিত থাকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকেই যাবে। সে কারনেই চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আরোও বলেন যে কারাগারে পৃথিবীর সব মানুষ নিশ্চিত নিরাপত্তা পায়, সেই কারাগারেই ঘাতকদল ভিতরে ঢুকে এই জাতীয় চার নেতাকে ব্রাশফায়ার করে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেদিন জাতি হারিয়েছিল দেশের সূর্যসন্তানদের আর আমরা হারিয়েছি এই দেশের শ্রেষ্ট্র বীরদের।3

আমরা এই চার নেতার জান্নাত কামনা করি। আল্লাহ যেন তাদের জান্নাতে প্রবেশ করেন সেই দোয়া করি। আর শহীদদের পরিবারের প্রতি রইল গভীরসমবেদনা।

আমরা সবাই মুক্তিযুদ্ধের শক্তি ঐক্যবন্ধ থাকলে বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি তাহার দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে কাউকে কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে সবাইকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য অনুরোধ জানান।“বাঙালি জাতি, মানব সভ্যতা ও গণতন্ত্রের ইতিহাসে বেদনাময় রক্তঝরা এক কলঙ্কময় দিন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে ঢাকা কেন্দীয় কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন এম. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। একাত্তরের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের শত্রুরা সেদিন দেশ মাতৃকার সেরা সন্তান, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর এই জাতীয় চার নেতাকে শুধু গুলি চালিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, কাপুরুষের মতো গুলিবিদ্ধ দেহকে বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে ৭১’র পরাজয়ের জ্বালা মিটিয়েছিল। কারাগারের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা অবস্থায় এ ধরনের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয়, স্তম্ভিত হয়েছিল পুরো বিশ্ব। তিনি আরো বলেন এই সকল ঘাতকদের চলমান বিচার কার্য সচল রাখতে বর্তমান সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে এবং ঘাতকদের বিচার কার্য অব্যাহত রাখতে হবে”।

বলেন-“বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ এ চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের এ দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সদ্যস্বাধীন দেশকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তাদের হত্যা করে। এতোবড় নৃশংস ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নাই। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এই সকল ঘাতকদের বিচার কার্য শুরু হয়েছে। এই বিচার প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকারকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে হবে।

আসন্ন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টন কে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার জন্য বাঙ্গালী কমিউনিটির প্রতি আহ্বান জানানো হয় ।

জনাকীর্ণ এ অনুষ্ঠানে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন সভাপতি জনাব শাহিন মাহমুদ। পরিশেষে নৈশভোজের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
অনুষ্ঠান  পরিচালনা করেন যুগ্ম সম্পাদক  জনাব ফারুক আহমেদ।

Awamileague Times
By Awamileague Times নভেম্বর ৬, ২০১৬ ১৯:৫৫

  • Sorry. No data yet.
Ajax spinner